
গুগল সব জানে
রাত জেগে কোন সাইটে কতটা সময় কাটিয়ে আসো আর দেশ বা রাজনীতির পোস্টে কটা লাইক মারো
গুগুল সব জানে।
শুধু জানে না–সারাদিনের শেষে তোমার পকেটে ক’টাকা পড়ে আছে
কিংবা ক’ফোঁটা চোখের জল তোমার শুকোতে বাকি রাতটা খরচ করছো ,
গুগল আর সব জানে।
মানচিত্রের নদীগুলো কটা দেশ ছুঁলো
এভারেস্ট এর চূড়ায় ক’জনের পা পড়লো
এমনকি কোন রাস্তা পাকা হলো
কোন বস্তি উচ্ছেদ হয়ে গড়ে উঠলো বিশাল ইমারত
সবই জানে গুগল ।
শুধু জানে না–ওই গাছের তলায় আশ্রয় নেওয়া ভজা পাগলাটা কোথায় গেলো ,
যে ভজা পাগলার টিনের কৌটোয় রোজ রান্না হতো বাজারের কুড়োনো চাল-সব্জির মিশেল ।
গুগল সব জানে ।
সেনসেক্স কত উঠলো ,সোনার দাম কত পড়লো, ব্যাঙ্কের ইন্টারেস্ট কত বাড়ল, পে কমিশন কত ঝাড়লো,
কতজন অনশনে বসলো ক’জন লাঠির গায়ে হাসপাতালে -তাও জানে
শুধু জানে না–হরিমতির মেয়েটা গতরাতে কিভাবে বেপাত্তা হলো
পরদিন রক্তাক্ত ছিন্নভিন্ন দেহ ঘিরে পথ অবরোধ
সেটাও জানে গুগল ।
শুধু জানে না–মেয়েটার খুব পায়েস খাওয়ার শখ-
দুধ জোগার করে পায়েস রেঁধে সারারাত চোখের জলের পাহারায়
তার মায়ের চোখের জল কিভাবে শুকিয়ে
পরের দিন রক্ত বর্ণ অগ্নিবাণ হয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছিল অভিশপ্ত সমাজটাকে
গুগল সব জানে ।
দেশভাগ হলো -সিনেমা তৈরি হলো -অ্যাওয়ার্ড এলো , অন্য দিকে বোমা ফাটল- জঙ্গি হামলা হলো- , কটা লাশ দগ্ধ হলো নৈরাজ্যের আগুনে
গুগল তাও জানে ।
শুধু জানে না–ওই লাশের পোড়া গন্ধে জীবনের সব সুগন্ধি হারিয়ে ক’টা পরিবারের জীবন কতটা শ্মশান শুষ্কতায় নিমজ্জিত হলো
গুগল সব জানে সব– সব–
জনসংখ্যা কতটা বাড়ছে ,কত মানুষ মরছে,
কারা মঙ্গল ,চাঁদ কিংবা ইউনিভার্স-এ পাড়ি দিচ্ছে জানে গুগল
শুধু জানে না রকেট বানাতে গিয়ে যে শ্রমিকের চোখের দৃষ্টি হারিয়ে গেছে তার পুত্রের স্কুলের ভর্তির টাকাটা কে দিয়েছিল ।
গুগল জানে তোমার গতিবিধি
গুগল জানে তোমার শহরের অলিগলির জনসংখ্যার উন্নয়নের লেখচিত্র
শুধু জানে না–গুগল ম্যাপে তোমার পদার্পণ এঁকে যাওয়া পদচিহ্নের পাশেই ক’টা ভিখিরি
যাদের বৃষ্টিভেজা দিনের রোজগার বন্ধ হওয়ায় বাজারের চাতালে ঘুমন্ত শিশু দুটি রাতে কি খেয়েছিল । কটা আত্মহত্যা হলো , কি কারণে–
তাও জানে গুগল ।
যে মানুষটা অভাবে বেকারত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে মরতে না চেয়ে একমাত্র বাঁচার স্বপ্ন নিয়ে মৃত্যুঞ্জয়ী হতে চেয়ে,
ভিতরে কতটা যন্ত্রণার এভারেস্টের বরফ আড়াল করে আছে —তার হিসেব জানে না গুগল । গুগল সব জানে সব সব
সমস্ত সংখ্যা সমস্ত উন্নয়ন সমস্ত ধ্বংস সমস্ত মৃত্যু সমস্ত ইতিহাস —- সব জানে গুগল
কেননা গুগল একটা সংখ্যা মাত্র
গুগল কতগুলি শব্দ মাত্র
যার সার্চ ইঞ্জিনে আমরা বিশ্বব্রহ্মান্ডকে খুঁজে পাই
শুধু সেখানে নেই আমাদের হৃদয়ের কথা , যন্ত্রণার কথা মাটির মানুষের কষ্টের অভিব্যক্তি আর তোমার আমার চোখের জলের হিসেব
সব জানে গুগল
শুধু জানে না–ভালোবাসারও এক ইউনিভার্সে কিভাবে তৈরি হচ্ছে ব্ল্যাকহোল
যা সেকেন্ডে সেকেন্ডে গ্রাস করে নিচ্ছে আমাদের প্রেম ভালোবাসা বিবেক আর অনুভূতির বর্ণ মালাদের ,
সেসব জানে না গুগল ।
সে সব গুগুল জানতে পারে নি ।
কিশোর মজুমদারের কবিতার তালিকা👇
- আমিও পারি
- আমিও পারি ২ / (শুধু তোমারই জন্য)
- সম্পর্কের সামিয়ানা – প্রেমের কবিতা
- পরবাসী – আবৃত্তির বাংলা কবিতা
- একটি প্রেমের গপ্পো
- সেই হাত কোথায়
- রাত্রি
- ফাঁকা পকেটে প্রেমের স্বপ্ন
- ফাঙ্ ফাঙা নাগে
- আকাশ ছোঁয়া
- ভালো থাকিস খোকা
- ভোর দেখব বলে
- ঝরা পাতার উত্তর
- মানে
- আলপিনের বাক্স
- একাকীত্বের অংশীদার
- কান্না মেশে দীঘির জলে
- সন্ধ্যাতারা
- হৃদয় ফুলদানি
- তোতন ভূত দেখেছে আজ
- জলের ভাষায় মুখরতা
- জল-কাজলের অক্ষর
- নক্ষত্রের রাতগুলি
- পোড়ো বাড়ি
- মেয়ে-পুতুলের জন্মান্তর
- মা, আমায় আরেকবার জন্ম দাও
- কেন তুই চলে গেলি
- কেমন আছে অপু দুর্গারা ?
- গুগল সব জানে
- প্রণয় গাথা
- মনের মফস্বলে
- সরলরেখায়
- ত্রাণ শিবির
- ভালবাসার মানে অভিধান দেখে শেখা যায় না
- মোবাইল ফোন
- গোলাপ , ছুরি ও বন্দুক
- সাঁকো তলায় জলশব্দ
- তার চেয়ে চলো
- ব্যবধান
- সম্পর্কের সামিয়ানা
- ছাতা
- কোনো শর্ত নিষ্প্রয়োজন
- শিউলি ও শরৎ
- আগমনী
- স্বাধীনতা
- হরনাথের পিসি
- অভিমানী বর্ণমালা
- মেটে শরীরের খোলস
- বায়না
- যে বসন্ত চাইনি কোনোদিন
- তোমার তর্জনি ও আমার কম্পাস
- ডাক
- আহত ঘাসের শেকর
- মোক্তার চাচা
- বৃষ্টি নামার ছলে
- ভারতটা ঠিক কোন দিকে
- Sign Language ও বোবা আমি
- ডানা
- রাইকিশোরী
- কৌণিক কক্ষপথ
- মৃত্যু
- মনজঙ্গল
- বৃক্ষচ্ছায়া
- প্রবেশাধিকার
ভাল লেগেছে, যে কোনোদিন আবৃত্তি করে ফেলবো হয়তো 😀
আপনার ব্লগে আজকেই প্রথম এলাম। সময় পেলে আমার নতুন ব্লগেও ঘুরে আসতে পারেন, আগেকার কিছু আবৃত্তি শোনারও আমন্ত্রণ থাকলো।
sumitahsan ডট কম এ পাবেন আমাকে, সরাসরি লিঙ্ক দিলাম না তাতে স্প্যাম হিসেবে কাউন্ট হতে পারে বলে।
ধন্যবাদ
খুব ভালো লাগলো । ঠিক আছে দেখবো আপনার ব্লগটা ।