পরবাসী
কিশোর মজুমদার
গ্রাম থেকে চলে এসেছি দূরে-
আমার মা, আমার ভাই শুকনো রোদ্দুরে সবুজ মাখতে মাখতে –
আজও চাদরের মত বিছিয়ে রেখেছে ধানের ক্ষেত।
কোদালের সাথে জীবন,
লাঙলের সাথে জীবন,
কাঙালের সাথে জীবন সেখানে।
জীবনানন্দের পাতা থেকে ঘেটুঁফুলের গন্ধ
আর কলমির শাক ভরা একটু খুশি এনে দেবো ব’লে
গ্রাম থেকে চলে এসেছি দূরে–
জীবন থেকে চলে এসেছি দূরে;
শুকনো লঙ্কার মতো মোচড়ানো বিষন্নতা ঘিরে
পাঁজি পুঁথি নক্ষত্রে গিয়ে চলে তাদের পৃথিবী
গোল বৃত্তাকার পথে।
আমার মায়ের গলায় দারিদ্র্যের মালা
আমার ভাইয়ের বুকে দোলে আশ্বাসের মাদুলি
মায়ের ফসলের স্নেহ-
আর ভাইয়ের হাতে ফসলের অন্যায্য মূল্য রেখে ,
হর্ণ বাজিয়ে চলে আসতে হয়েছে আমাকে ।
কাশফুলে ভরা শরৎ ,
পেঁজা মেঘের ভেলায় শিউলি-ভোর ,
আর ছুটির দিনের দারুণ দুপুরে পানকৌড়ির শৌখিন ডুব–
এসবই নিয়ে এসেছি ছেলে মেয়েদের জন্য,
নাহলে ওরা তো গ্রাম-ই চিনবে না।