কিশোর মজুমদার
কেমন আছে অপু দুর্গা রা ?
দূরে কাশবনের ঘাস ছোপ ছোপ খালি পায়ে
দৌড়ে আসছে মেয়েটি
সঙ্গে তার ছোট্ট ভাই
রেললাইন দেখা , আতুর ডাইনির ঘর
সব পার করে আজও দৌড়চ্ছে তারা...
গ্রাম শহর বাজার ঘাট কলকারখানার গেঞ্জাম পেরিয়ে রান্না ঘর মুদি দোকান মিষ্টির দোকান কিংবা
ইটভাটার মলিনতায় তারা ছুটছে আজও
অপু দুর্গা ...
কেমন আছে এই অপু দুর্গারা ?
রান্না ঘরে বাসন মাজছে দুর্গা
অপু কাজ করে মোটর সাইকেল গ্যারেজে
পেটের ভাতের জোগান তাদের স্বপ্ন
দরিদ্র পরিবারে বাঁচার তাগিদ তাদের প্যাশন।
মনে পড়ে যায় সদ্যোজাত ভূমিষ্ঠ শিশুর প্রতি
কিশোর কবির অঙ্গীকার --
---এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করার
প্রতিশ্রুতির কথা ।
কয়েকশো বসন্ত-শীত পার করেও আমরা
মাথা নত করে স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছি
এ বিশ্বে শিশুর বাস হলো , কিন্তু এ বিশ্ব এ শিশুর যোগ্য হলো না ।
যখন কচুরিপানার নীচে
বালিকার পচাগলা লাশ বেরোচ্ছে
ঝোপঝাড়ে পরিত্যক্ত শিশুর কান্নায়
ধ্বনিত হচ্ছে অস্ফুট সোচ্চার
যখন স্কুল ফেরত কন্যার রক্তাক্ত গায়ে
হাজার প্রশ্নের ভীমরুল হূল ফোটাচ্ছে
তখন কি একবারও প্রশ্নের কাঁটা এসে বিদ্ধ করেনা ময়দা মাখা মুখোশ ঢাকা শৌখিন সমাজের
জেড ক্যাটাগরি নিরাপত্তার পাঁজরে ঢাকা
হৃদয়টাকে ?
কেমন আছে অপু দুর্গারা ----
কেমন আছে !!
ভারী ব্যাগের তলায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া স্বপ্ন গুলোকে ভাঙা সংখ্যায় পরিণত করার চেষ্টায়
যেভাবে খাটে সম্ভ্রান্ত শিশু শ্রমিক ।
তেমনি রকমের অপু দুর্গারা
জলে স্থলে মানুষের ছড়ানো শিল্প কারখানার মতো উন্নতির শাখা পল্লবে পল্লবে
আজও নীরবে বাষ্পমোচন করে তাদের অশ্রু
---শুধু আকাশ টা তাদের হতে পারেনি আজও ।
হে কবি , আমরা এই পৃথিবীকে তাদের বাসযোগ্য করে তুলতে পারছি কই ?
আজও এই পৃথিবীকে তাদের বাসযোগ্য করে তুলতে পারছি না কেন ? ।